শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১১ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সরকার যখন বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও পঙ্গু ভাতা দিতে বদ্ধপরিকর ঠিক তখনেই তার উপরে নজর পড়েছে ইউপি সচিবের। বর্তমান সরকার সব চেয়ে বেশি সুনাম অর্জন করেছে এসব ভাতা বিতরনে। সরকারের নীতি নির্ধারকরা এ কাজের উপর জোর দিয়েছেন। বরিশালের বর্তমান জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলার ইউএনও সব সময় এই কাজের মনিটরিং করে থাকে। এর পরেও সকলের চোখ ফাকি দিয়ে এসব ভাতার উপরে কু-দৃষ্টি দিয়েছেন সদর উপজেলার শায়েস্তাবাদ ইউনিয়নের সচিব আরিফুর রহমান।
নিজেকে সচিব পরিষদের সাধারন সম্পাদক পরিচয় দিয়ে এমন অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।সূত্র জানা গেছে, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও পঙ্গু ভাতার বই আটকে ১ হাজার থেকে ১৫ শত টাকা আদায়ের অভিযোগ করেছে উপকার ভোগীরা। বুধবার সরেজমিনে গেলে শুনা যায়, ইউপি সচিব আরিফুর রহমানের এসব চিত্রের কথা।কথা হয় উপকারভোগী চরআইচা গ্রামের আমির সর্দারের সাথে তিনি জানান, আমাদের নতুন বই দেয়ার কথা বলে আমাদের কাছ থেকে বই নিয়েছে সচিব স্যার।
এরপরে জুলাই মাসে তার কাছে বই চাইতে গেলে তিনি আমাকে ১২শত টাকা নিয়ে দেখা করতে বলেন। আমি টাকা দিতে না চাইলে আমার বই ফেরৎ পাঠিয়ে দেবে বলে জানায়। পরে আমার এক আত্মীয়র কাছ থেকে ১ হাজার টাকা এনে দিলে আমাকে আমার বই ফেরৎ দিয়ে দেয়। তবে সে প্রায় সময় এমন কাজ করে বলে জানান আমির সর্দার।
অনুসন্ধান করতে গিয়ে কথা হয় উপকারভোগী নিলু বেগমের সাথে। তার কথা শুনে আতকে উঠার পালা। পরিবার পরিজন বলতে কেউ কাছে থাকে তার। স্বামীর রেখে যাওয়া কুড়ে ঘরই তার এক মাত্র সম্ভল। শায়েস্তাবাদের সুনামধন্য চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান মুন্না ও ইউপি মেম্বারের দয়ায় একটা বয়স্ক ভাতার কার্ড পান সর্বহারা এই নারী। তার বই লিখতে হবে বলে চেয়ে নেন সচিব আরিফুর রহমান। এরপরে বই চাইতে গেলে নানা তালবাহানা শুরু করে সচিব।
তিনি আরো বলেন, পরে একজনকে দিয়ে বলেছে তার বই ফেরৎ নেয়ার জন্য চিঠি এসেছে। কি হলে থামানো যাবে জাানতে চাইলে ১৫শত টাকা লাগবে। পরে সুদের উপর টাকা এনে ১৫শত টাকা পরিশোধ করে বই নিয়ে নিয়েছে অসহায় নিলু বেগম।ভিন্ন ভাবে কথা হয় আইচা গ্রামের হাসেম আলীর সাথে তিনি জানালেন ইউপি সচিবের কর্মকান্ডের কথা। তার কাছ থেকে ১ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে।
আরো কথা হয় ছালাম ও শাহাজাহান হাওলাদারের সাথে। তারা জানালেন একই কথা সচিব টাকা না দিলে কোন ভাতাই পাওয়া যাবে না এমন জানালেন তারা। গনামধ্যমকর্মীর পরিচয় পেয়ে তারা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, বাবা মোগো বই যেন আবার নিয়া না নেয় সেটা একটু আপনি দেইখেন।ইউপি সচিব আরিফুর রহমানের বিরুদ্ধে শুধু বয়স্ক, বিধবা ও পঙ্গু ভাতার উপর থাবাই নয়। তার জন্য অনেক বেড়েছে বাল্য বিবাহ। জম্ম নিবন্ধনের মাধ্যমে অপ্রাপ্ত মেয়েকে প্রাপ্ত বানানোর কাজে ২ হাজার টাকাই যথেষ্ট। এমন অভিযোগ উঠেছে সচিবের বিরুদ্ধে। জম্মনিবন্ধনের ব্যবসা বর্তমানে জমজমাট বলে জানালেন ইউপি পরিষদের চৌকিদাররা।
তারা জানান, মোরা কাগজ আর টাহা লইয়া সচিব ছারের কাছে যাই আর পরের দিন জম্ম নিবন্ধনের কাগজ এনে পার্টিকে দিয়ে দেই। জম্ম সনদ, মৃত সনদ ও ওয়ারিশ সার্টিফিকেট বানিজ্যে মাতোয়ারা ইউপি সচিব আরিফুর রহমান। নিজেকে সচিব পরিষদের সাধারন সম্পাদক পরিচয় দিয়ে আরো বেশি অপকর্মে জরিয়ে পরেছে।বিষয়টি নিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুর রহমান মুন্নার সাথে আলাপ করলে তিনি জানান, আমার কাছে কোন অভিযোগ আসে নাই আসলেই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সেল ফোনে কথা হয় ইউপি সচিব আরিফুর রহমানের সাথে তিনি গনমাধ্যমকর্মীর পরিচয় নিয়ে অভিযোগের বিষয়ে কথা বলতে চাই তিনি সকল বিষয় এড়িয়ে যান।তবে এলাকাবাসীর দাবী ইউপি সচিবের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিয়ে শায়েস্তাবাদের সরকারী উপকারভোগীদের রক্ষা করার।
Leave a Reply